আজব দেশে গজব দাবি
------------------------------------------
চ্যানেল আইয়ের খবরে দেখলাম, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় সীমা ছেলেদের জন্য ৩৫ ও মেয়েদের জন্য ৩৭ করার আলোচনা চলছে। এবং আন্দোলনকারীরা ৭২ ঘন্টার আলটিমেটাম দিয়েছে। ৭২ ঘন্টার মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে বলে তারা সময় বেঁধে দিয়েছেন। এখন পরিস্থিতিটা এই যে, ছাত্ররা যা বলে তাই করতে হবে।
বিনয়ের সঙ্গে ভিন্নমত প্রকাশ করে কয়েকটি কথা বলতে চাই।
মানুষ বাঁচে কয় বছর? ৩৫ বছরে চাকরিতে ঢুকলে একটা ছেলে বিয়ে করবে কখন? সাধারণত চাকরিতে ঢুকেই এদেশে ছেলেরা বিয়ে করে। বেকার ছেলের কাছে কোনো অভিভাবক মেয়ে বিয়ে দেন না। ৩৫ বছরে তো যৌবনই প্রায় শেষ। এই বয়সে বিয়ে করে স্ত্রীর সাথে সেক্স করার শারীরিক সামর্থ্য কতোটুকু থাকে? আর ৩৫ বছর বয়সে চাকরিতে ঢুকে দেশকে তারা কি সার্ভিস দেবেন? ৪০ বছরে চুল দাড়ি পেকে যায়। ৪০ বছরের পর জীবনীশক্তিও হ্রাস পায়। কাজ করার শারীরিক মানসিক সামর্থ্য কমে যায়।
অনেক পেশায় ৩৫ বছরের আগেই অবসর গ্রহণ করে। যেমন খেলোয়াড়। সেনাবাহিনীতে ৩৫ বছরে একটা ছেলে লেফটেন্যান্ট কর্নেল হতে পারে। একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল একজন জেলা প্রশাসকের সমপদমর্যাদার।
৩৫ বছরে চাকরিতে ঢুকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারলেও অনেক কিছুই তখন আর দাঁড়ায় না।
ইউরোপ আমেরিকায় ২৫/২৬ বছর বয়সে ছেলেমেয়েরা পিএইচডি করে।
ছাত্ররা সেশন জ্যাম বন্ধ করার দাবি না তুলে চাকরির বয়স সীমা বৃদ্ধির দাবি তুলেছেন তা গ্রহণযোগ্য নয়। এই দেশে ৫ বছর বয়সে একটা ছেলে বা মেয়ে স্কুলে ভর্তি হয়। ১৫ বছর বড়জোর ১৬ বছর বয়সে এসএসসি পাস করে। ১৮/১৯ বছরে এইচএসসি পাস করে। ৪ বছর অনার্স আর ১ বছর মাস্টার্স। সর্বোচ্চ ২৫ বছর বয়সে আরও বেশি করে ধরলে ২৬ বছর বয়সে একজন শিক্ষার্থী মাস্টার্স কমপ্লিট করার কথা।
সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বাড়ানোর চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স-মাস্টার্স সঠিক সময়ে সম্পন্ন করার নিশ্চয়তা বেশি জরুরি। সেশন জ্যামের কারণে শিক্ষার্থীরা তাদের জীবনের মূল্যবান অনেক সময় জীবন থেকে হারিয়ে ফেলে। এ ক্ষতি কোনো কিছু দিয়ে পোষানো যায় না।
কাজেই চাকরির বয়সসীমা বাড়ানোর দাবি না তুলে সেশন জ্যামের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন। ২৫/২৬ বছর বয়সে যেনো মাস্টার্স শেষ করা যায় তা নিয়ে শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের এখনি সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ। বিপ্লবোত্তর নতুন বাংলাদেশে শিক্ষা ব্যবস্থায় এই পরিবর্তন হোক সবকিছুর আগে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন