সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আলম চিঠি

 আলম,

তোমাকে প্রথম আমি একটা চার লাইনের মেসেজ লিখেছিলাম আমার অসুস্থতা নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে। সম্ভবত ২৫ বছর পর। শুনলাম, তুমি নাকি আবুল খায়ের ভাইয়ের কাছে এই নিয়ে হাসাহাসি করেছো। আরও অনেক কিছু বলেছো। তিন বছর আগের রিপোর্ট আমি পাঠিয়েছি। এটা তো তিন বছর আগের রিপোর্টই। সে অনুযায়ী চিকিৎসা করতে বলেছে। আর্থিক সমস্যার কারনে তা সম্ভব হয়নি। বয়সের সাথে সাথে মানুষ পরিবর্তন হয়। তোমার আর পরিবর্তন হলো না। আপসোস। 

তুমি নাকি বলেছো, 'এখন আমাদের দরকার হয় কেনো?' তোমাদের দরকার আমার কোনো কালেই হয় নাই? উল্টো আমাকেই তোমাদের দরকার হইছিলো। ১৯৯০ সালে, আজ থেকে ৩৫ বছর আগে তোমার ভাই আজাদ আমাকে অস্ট্রিয়ায় চিঠি লিখেছিলো।

 'কাকা, আজ তিন দিন না খেয়ে আছি। কিছু টাকা পাঠান। নইলে বাঁচবো কিভাবে?'

 আমি হিরুর মাধ্যমে আজাদকে ১৫ হাজার টাকা পাঠিয়েছিলাম। সেই টাকা দিয়ে তোমরা হোসেন মিয়ার ১২ গন্ডা জায়গা লাগিদ রাখছিলা। সেটাতে ধান চাষ করছিলা। ৯৫ তে কোহিনূরের বিয়ের সময় তুমি আমাকে বলেছিলা, 'কাকা, আপনার সেই টাকাই আমাদের টার্নিং পয়েন্ট। অন্তত ভাতের চিন্তা করতে হয় নাই।' তুমি ভুলে গেছো। স্বার্থপর আর অকৃতজ্ঞদের কাজই হলো ভুলে যাওয়া। 

কোহিনূরের বিয়ের সময় যে তাহের জাহাঙ্গীরদের দুইটা মাইক্রোবাস সারাক্ষণ বিয়ের কাজে ব্যস্ত ছিলো সেই গাড়ি কার পরিচয়ে এসেছিলো? তাহের, জাহাঙ্গীর তোমার কে ছিলো? কুমিল্লা শহরে তোমাকে যে কয়জন চিনতো সেটা মন্টুর ভাতিজা হিসেবেই চিনতো। এখনো কুমিল্লা শহরে তোমার চেয়ে মানুষ আমাকে বেশি চিনে।

কোহিনূরের বিয়ের সময় আমার ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিলো। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানের সব খরচ আমি বহন করেছিলাম। হলুদ অনুষ্ঠানে হলিউড ফটোগ্রাফার্স থেকে মিজান এসেছিলো ভিডিও করতে। বাপ্পীকে দিয়ে হলুদ স্টেজ সাজিয়েছিলাম। বাপ্পী তোমার কে ছিলো?  আমি বন্ধুদের নিয়ে মহরা ছবির 'তু চিজ বাডি হ্যায় মাস্তে মাস্ত' গানের সাথে নাচছি। দেখি সোহেল নাই। আমি ভাবীকে জিজ্ঞেস করলাম, সোহেল কই? ভাবী আমাকে আলাদা করে ডেকে নিয়ে বললেন, সোহেলের শার্ট নাই। তাই লজ্জায় আসে না। আমি তাড়াতাড়ি আমার স্যুটকেস খোলে একটা লাল হাফ শার্ট সোহেলকে দিলাম। তারপর সোহেল এলো। কোহিনূরের বিয়ের ভিডিও দেখে নিও। সোহেলের গায়ে লাল হাফ শার্ট। 

তারপর তুমি বললে, কাকা, আপনি একটা স্টিল আলমারি দিয়ে দিয়েন। আমি তাই দিয়েছিলাম। রামঘাট, গাংচরের আপা আসতো না। অপু- কোহিনূরকে নিয়ে তখন তোমাদের বিরুদ্ধে বিরাট যুদ্ধ। আমি বোনদের সাথে যুদ্ধ করে তাদের এনেছিলাম। তাহেরের হোন্ডা সিডিআই নিয়ে আজাদকে নিয়ে পাইকপাড়া থেকে ভাউদ্দাপাড়া থেকে মনশাসন থেকে মহেশপুর থেকে আগানগর সব জায়গায় আমিই গিয়েছিলাম সবাইকে দাওয়াত দিতে।

তুমি তোমার ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে কাউসার আর বাদলকে দাওয়াত দিয়েছিলা। কাউসার আসতে পারেনি। আমাকে বলেছে। তারাই তোমার তীব্র সমালোচনা করেছে আমাকে না বলায়। বাদল, কাউসারকে চিনেছো কাকে দিয়ে? ওরা তোমার কে? তাদেরকে কাকা ডাকো কার বন্ধু হিসেবে? 

স্বাধীনতার আগে থেকে ওরা আমার বন্ধু। বড় আপা তখন জাফর খান রোডের বাসায় ছিলেন। আমি প্রতি সপ্তাহে যেতাম। সেই ক্লাস ওয়ান টু থেকে বাদল, কাউসার, আলমগীর, জাফর খানের নাতি এখন সাত্তার খান কমপ্লেক্সের মালিক হাসিব, আরিফ আমার বন্ধু। এখনো কুমিল্লা শহরে তোমাকে চিনে মন্টুর ভাতিজা হিসেবেই। আমি প্রায়ই শহরে যাই। আমার বন্ধুরা জানে তোমাদের কি ছিলো এক সময়? আর আমি কি করেছি তোমাদের জন্য। 

একজন তো বলেই ফেললো, 'মন্টু, তুই তাদেরকে যেই হেল্প করছোস আজ তারাই তোর খোঁজ নেয় না। এবার বুঝ মানুষের মাঝেই অনেক অমানুষ তোর আত্নীয় স্বজনের মাঝেই আছে। দূরে যাওয়ার দরকার কী?'

আমাদের এলাকার আরেকজন বললো, 'আমি যখন আলম ভাইয়ের অফিসে যেতাম, তখন আপনি আমেরিকা থেকে ফোন করলে আলম ভাই পাগল হয়ে যেতো। সব কাজ ফেলে বলতো, বসেন, ছোট কাকা আমেরিকা থেকে ফোন করেছে।'এসব মানুষই আমাকে বলে। 

আমেরিকা থেকে প্রথম হক নামের এক লোকের মাধ্যমে তোমার জন্য ৩০০ ডলার পাঠাইনি? তারপর তুমি বিয়ে করে না আত্নহত্যা করে মরে যেতে চাইছিলা খোকনকে মালয়েশিয়া চিঠি লিখে। আর সেই চিঠি আমাকে পাঠাইছিলা নিউইয়র্কে। মনে নাই? তখন তোমার জন্য ৫০ হাজার টাকা পাঠাইনি? তোমার মা আমাকে খুব করুণ একটা চিঠি লিখেছিলেন। তোমার আব্বার শরীর খারাপ। ডাক্তার দেখাতে হবে। তাই যেন আমি চিকিৎসার টাকা পাঠাই। আরও অনেক কিছু লিখেছিলেন। আমি তোমার বাবার একাউন্টে ৩০ হাজার টাকা পাঠিয়েছিলাম। সেই একাউন্ট ছিলো সোনালী ব্যাংক, স্টেশন রোড ব্রাঞ্চ। 

ছাত্রজীবনে আমার পুরনো বই তুমি পড়োনি? তুমি আমার এক ক্লাস নীচে ছিলা। আমি পাস করেই সেই বই তোমাকে দিয়ে দিতাম। তুমি যাই লেখাপড়া করেছো সেগুলো আমার বই দিয়া। তুমি বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করেছো। কুমিল্লা শহরে তোমাকে কে চিনতো? আমিই তোমাকে শহরে নিয়ে সবার সাথে পরিচিত করে দিয়েছিলাম। এখনো কুমিল্লা শহরের অলিগলি তোমার চেয়ে বেশি আমি চিনি। শহরের মানুষ তোমার চেয়ে আমাকেই বেশি চিনে।

আমি যখন জাপান যাই তখন তোমাকে নিয়ে ফিরু আপার বাসায় দিয়ে গিয়েছিলাম যেন তোমার লেখাপড়ায় ব্যাঘাত না ঘটে। তুমি কিছু দিন থেকে চলে আসো। সেটা তোমার ব্যাপার।

আমি যখন ঢাকা জেনিসে ডাইরেক্টর তুমি তখন সার্কুলার রোডে ট্র‍্যাভেল এজেন্সিতে ১০০০ টাকা বেতনে চাকরি করো। আর জগাবাবুর (জগন্নাথ) কলেজে পড়ো। জগন্নাথ কলেজকে আমরা ইয়ার্কি করে জগাবাবুর কলেজ বলতাম। আর আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। আন্তর্জাতিক সম্পর্কে। আমার বদনাম করতে তোমার বিবেক বাধা দেয় না? লজ্জা করে না? অবশ্য তোমার বিবেক আর লজ্জা আছে কিনা সেটাও প্রশ্ন সাপেক্ষ।

তুমিতো ৮২ সালে নকলের কেন্দ্র বুড়িচং থেকে মেট্রিক পাস করেছো। তোমার ইংরেজি পরীক্ষার দিন আমিও বুড়িচং কেন্দ্রে গিয়েছিলাম তোমাকে নকল দিতে।

আমি বাড়িতে থাকতে ২০০৭ সালে তুমি আমার বিষোদগার করে মিথ্যা বানোয়াট এক দীর্ঘ চিঠি লিখে গ্রামে ছেড়েছিলে। আমাকে অপমান করার জন্য। আমি কিছুই বলিনি। তুমি আমার পাসপোর্ট এর ফটোকপিতে আমার প্রোফেশন দেখিয়ে তুমি আমাকে প্রতারক চিহ্নিত করেছিলে। একজনের পাসপোর্ট রাখা ফৌজদারী অপরাধ। তুমি যে মানুষের পাসপোর্টে ফটো চেইঞ্জ করে মানুষ বিদেশে পাঠাতা তা কি ভুলে গেছো? সেই চিঠিতে তুমি উল্লেখ করেছিলা ১ বছর পর আমার বিএ পাস সার্টিফিকেট বাতিল করা হয়েছে। অর্থাৎ আমি ইন্টারমেডিয়েট পাস। তুমি বিরাট শিক্ষিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঘাস খায়? আমাকে বাতিল সার্টিফিকেট দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে এমএ ভর্তি করেছিলো? ভর্তি পরীক্ষায় আমি মেধা তালিকায় দ্বিতীয় হয়েছিলাম। এখন টিভি টক শোতে আসেন। একজন নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রফেসর ড. শাহিদুজ্জামান ছিলেন তখন আমার ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান। আমার ভাইভা তিনিই নিয়েছিলেন। 

আরও বহু কিছু তুমি লিখেছিলা। আমার উশৃংখল চালচলনে আমেরিকা সরকার আমাকে বহিস্কার করেছে। (আর আমি এখন আমেরিকার বন্ধুদের টাকায় চলি।) নিউইয়র্ক, ফ্লোরিডা যাও। গিয়ে আমার পরিচয় দাও। তবেই বুঝবা আমি সেখানে রাজা ছিলাম। আরও লিখেছো, আমি মদ খাই। গাঁজা খাই। 

মদ তুমি আমার সাথে বসে খাওনি বিজয়নগর নাইটিংগেল বারে? সাকুরা বারে? ফকিরাপুল  জামালের হোটেল 'আল জামালে' বসে জামালের সাথে মদ খাওনি? জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল। নয়া পল্টন বিএনপি অফিসের উল্টোদিকে আনন্দ কমিউনিটি সেন্টারের পেছনে চারতলায় বাপ্পী, কায়েস, শামুর সাথে দিনের পর দিন গাঁজা খাওনি তুমি ? ৩১ ডিসেম্বর নববর্ষের রাত বিএনপি অফিসের সামনে মদ খেয়ে মাতাল হয়ে বেহুশ হওনি তুমি? শামু,কায়েস, বাপ্পী সবাই ধরাধরি করে তোমাকে বাসায় আনেনি? এখন হুজুর হইছো? গ্রামে এসে ভাব চোদাও? 

আমার বিরুদ্ধে ওই চিঠিতে আরও লিখেছো,আমার শহরের বন্ধুরা আমাকে পরিত্যাগ করেছে। কে পরিত্যাগ করেছে? জাহাঙ্গীরের বোন মনির সাথে আমার প্রেম হয়ে গিয়েছিলো। সেই থেকে তাদের সাথে সম্পর্ক নষ্ট। আর মুন্নার বোন শেলিকে আমার সাথে বিয়ে দিতে চেয়েছিলো। তাই তাদের সাথেও সম্পর্ক শেষ। আর তো কারো সাথেই সম্পর্ক নষ্ট হয় নাই। বাদল, কাউসার, আলমগীর, ইকবাল, মিন্টু, এনাম, তরুণ, শাহীন, পার্থ, চিত্তসহ সবার সাথেই সম্পর্ক আগের মতোই আছে। আমি প্রায়ই রেইস কোর্স  কান্দির পাড় যাই।

তোমার বন্ধুরাই তো তোমাকে পরিত্যাগ করেছে। আজাদ ( শাসনগাছার,) টিটো,খায়ের তারা তোমাকে পরিত্যাগ করেনি? আমি না এখন এই এলাকায় থাকি। মানুষ না আমাকে বলে, তুমি দিনের পর দিন শংকরপুর রশিদের বাসায় পড়ে থাকতা। এখন রশিদকে চিনো না। সাইফুল মাস্টার কিছু দিন আগে আমাকে বললো, 'সোহেল দিনের পর দিন আমার বাসায় ভাত খাইছে। এখন সে আমাকে চিনে না। টাকায় মানুষকে নষ্ট করে দেয় এটা তারা প্রমাণ করলো'। এই এলাকায় লোকেরা আমাকে স্যার, চৌধুরী সাহেব ছাড়া কথা বলে না।

তোমার কুশিয়ারা ট্র‍্যাভেল ছিলো ইলিয়টগঞ্জের মুকুল নামে এক লোকের? সেই লোক হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়ার পর তুমি তা দখল করেছো। আমি এসব জানতাম না। এলাকায় অনেকে জানে। আমাকে তারাই বলেছে। আর আমি যে তোমাকে ১৩ লাখ টাকা পাঠিয়ে বলছিলাম, টাকাটা এমন ভাবে রাখবি যাতে আমার কিছু উপার্জন হয়। বিদেশ আর ভালো লাগে না। আমি দেশে চলে আসবো। তুই সেই টাকা দিয়ে তোর ট্র‍্যাভেল এজেন্সির জন্য বিমানের এপ্রোভাল নিছোস। আমি দেশে আসার পর ১৩ লাখ টাকাই ফেরত দিছোস। ফাঁক তালে নিজের লাভ করছোস। 

তুমি যে এতো অহংকার করো কি আছে তোমার অহংকার করার? কি আছে? টাকা যা আছে তা সোহেলের। আর টাকা নিয়ে অহংকার করার কিছু নেই। এমন টাকা এই এলাকার বহু মানুষের আছে। ওরা আমাকে ডেকে চা খাওয়ার অনুরোধ করে। 

তোমার অহংকার করার কিছু নেই। তুমি একজন আদম ব্যাপারি। কোনো চাকরি করার যোগ্যতা তোমার কখনোই ছিলো না। ট্রাভেল সার্ভিসের তোমার চাকরিও হইছিলো সুপারিশে। তোমার মতো আলমরে আমি গুনি? একবার তোমাকে গফুর সাহেবের বাসার সামনে কলার ধরে রিকশা থেকে নামিয়ে ফেলছিলো না একজন? টাকা নিয়া বিদেশ পাঠাওনি বলে। এই কথাও আমাকে একজন বলেছে। 

তুমি নাকি একজনকে অহংকার করে বলেছো, আমার দুই বোন ফয়জুন্নেসা স্কুলের শিক্ষক। সেই লোক দিঘির পাড় মানুষের কাছে বলছে,' আলম মিয়া গফ চোদায় হেই মিয়ার দুই বোন শিক্ষক। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পাইছে। আবার বড় বড় কথা চোদায়। হেই মিয়ার এক ভাই খোকন চোর। ঘোড়ামারাই খাম্বার সাথে বাইন্ধা পিটছে।' 

সত্য না মিথ্যা আমি জানি না।

আজ থেকে তিন দিন আগে আমাকে একজন বললো,

' আচ্ছা, করিম ভাই, আপনের ভাতিজা আজাদ এক সময় বাসে এসিসটেনি করছে। আমরা তো সবই জানি। মালেক ভাই দিঘির পাড় গামছা বিছাইয়া জুয়া খেলছে। এখন তো আল্লাহ দিলে টাকা পয়সা আছে। আজাদ তো তার পুরনো এসিসটেন্ট ড্রাইভারদের লগেই চলে। ইয়াকুব, মিজান এইডি কি মানুষের জাত নি? তুমি তোমাদের ছেলেমেয়েদের বিয়েতে তাদেরকে ভিআইপি দাওয়াত দাও!

এই হইছে তোমাদের স্ট্যাটাস! 

২০২০ সালে মানে ৫ বছর আগে শাসনগাছার টিটো, পাভেলের বড় ভাই আমাকে ফোন করে বললো, তোমাকে পিবিআই অফিসে নেয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। তুমি টিটোর আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের প্লট মেরে দিয়েছো। সেই প্লট তুমি আজাদকে পাওয়ার অফ এটর্নি দিয়েছো। আজাদ সেই প্লট বিক্রি করে খেয়ে ফেলেছে। আমি টিটোকে বললাম, টিটো, আমার বয়স হয়েছে। তারা আমার ভাতিজা। আমরা না বললেও মানুষ বলে। আমাকে এসব বলে কোনো লাভ নাই। আমি এসব ব্যাপারে জড়িত হবো না। টিটোর কেইসে তোমার নামে গ্রেফতারি ওয়ারেন্ট জারি হয়। বাহার মিয়ারে দিয়া আটকে রেখেছো এতোদিন। 

তোমার বিরুদ্ধে আরও গুরুতর অভিযোগ, তুমি বউ ফেলে বাইরের মেয়েদের কাছে যাও। তোমার বউ স্মৃতি টিটোর বউয়ের কাছে তোমার এই চরিত্রের কলংকের দিকের কথা বলে দু:খ প্রকাশ করেছে। আমি ঘুমাইয়া রইছি। আমারে ঘুমাইয়া থাকতে দাও। আমারে ঘুম থাইকা জাগাইও না। নইলে পিনাকি আর ইলিয়াসের মতো সব ফাঁস করে দেবো। এই বয়সে মাগিবাজি বন্ধ করতে পারো না? তুমি না বলে হজ্ব করছো? ছোট ভাইয়ের টাকা দিয়ে মাগিবাজি করো?

গত বছর জেমিমা এসএসসি পাস করে বিএএফ শাহীন কলেজে ভর্তি হয়েছে। আমি বললাম, কুমিল্লা আসো। জেমিমা, তার মা কুমিল্লা এসেছিলো। তাদের নিয়ে কয়েকজন আত্নীয়ের বাসায় গিয়েছিলাম। আগে গিয়েছিলাম তোমাদের বাসায়। বড় ভাই অসুস্থ। তাই। জেমিমা তোমার আব্বা, আম্মা, রোজির পায়ে ধরে সালাম করেছে। তোমার মা আর রোজির হাতে ৫০০/১০০০ টাকা উঠেনি জেমিমাকে দেয়ার জন্য। ছি:। মেয়েটা পাস করেছে। কলেজে ভর্তি হয়েছে। পায়ে ধরে সালাম করেছে। এটা আমাদের সমাজের কার্টেসিও। নোংরা মানসিকতার একটা সীমা আছে! তোমাদের সেই সীমাও নাই। সালাম করলে কিছু দেয়া তো একটা ইসলামী রীতিও।

অথচ আর যাদের বাসায়ই গিয়েছিলাম জেমিমা সবাইকে পায়ে ধরে সালাম করেছে। কেউ ৫ হাজার, কেউ ১ হাজার করে টাকা দিয়েছে সেলামি।

তোমাদের অত্যন্ত শুভাকাঙ্ক্ষী একজন লোক আমাকে অনেকদিন আগে বলেছিলো, 'আপনি তো তাদের সাহায্য করেছেন যখন তাদের চরম দু:সময়। এটা সবাই জানে। এখন তো তারা বিরাট ধনী। আমি হইলে কয়েকজন লোক ডাইকা আপনের সামনে ৫ লাখ টাকা রাখতাম। আর বলতাম, আপনি যা দিছেন তা নিয়ে যান।' 

তাইলেই তো আর কেউ বলতে পারতো না। তারাও বলতে পারতো উনি যা দিয়েছে তা আমরা শোধ করে দিছি। কি বালের লেখাপড়া করছে এরা? 

যাক বেশি কিছু লেখার এনার্জি নেই। সাবধানে থেকো। দেশের পরিস্থিতি ভালো না। তোমার গায়ে আবার আওয়ামী লীগের সীল।

ওই যে ৩৫ বছর আগে ভাতের চিন্তা থেকে তোমাদের মুক্ত করছিলাম সেইটা মনে রাইখো।

আমার ৬৩ বছর বয়সে তুমি আবার আগুন লাগাইছো। এই আগুনে অনেক কিছু পুড়বে মনে রাইখো। 

এখন আর তোমার আব্বা বাহার নাই। 

৩০/৩৫ বছর আগে তোদেরকে যেই টাকা দিছি তা দিয়ে কয়েক কানি জমি কিনতে পারতাম। সেই সময় ১ গন্ডা জায়গার দাম ছিলো ৩ হাজার টাকা।

* ২০০৭ সালে তুমি চিঠি লিখে গ্রামে আমাকে অপমান করেছিলে। ১৮ বছর পর ২০২৫ সালে আমি অনলাইনে লিখে তার প্রতিবাদ করলাম বিশ্বব্যাপী। 

১২ ফেব্রুয়ারি 

২০২৫

কুমিল্লা।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর