সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

জুন, ২০২৩ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

চে গুয়েভারা

 চে গুয়েভারা ------------------ চিকিৎসক থেকে বলিভিয়ার আপোষহীন সংগ্রামী হয়ে ওঠা চে গুয়েভারাকে পা*শবিক হ*ত্যা করার কাহিনী যতটা নৃশংস,ঠিক ততটাই বিপ্লবীর নিজের জীবন সংগ্রামের মতোই দৃষ্টান্তকারী। সেই ৯ অক্টোবর দুপুরের কিছুটা সময় আগে চে গুয়েভারা এবং তাঁর সঙ্গীদের আটক করার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরে বলিভিয়ার সেই গ্রাম লা হিগুয়েরার ছোট স্কুল ঘরে সার্জেন্ট মারিও টেরেন ঢোকেন সরকারের নির্দেশ পালন করতে। ঘরে ঢুকে তিনি দেখতে পান,উনি দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে আছেন,অপেক্ষা করছেন। সৈনিকের ঘরে ঢোকার উদ্দেশ্য চে গুয়েভারা বুঝতে পারেন। তিনি শান্তভাবে তাঁকে উঠে দাঁড়ানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন। সার্জেন্ট টেরেন ভীত হয়ে কাঁপতে থাকেন,দৌঁড়ে ঘর থেকে পালিয়ে যান ...... কিন্তু টেরেনকে ঘরে ফিরে গিয়ে আর বিলম্ব না করে চে-কে গুলি করে হত্যা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়,সৈনিকটি তখনো কাঁপছেন। স্কুল ঘরে ফিরে গিয়ে চে-র দিকে না তাঁকিয়ে তাঁর রাইফেল থেকে পরপর নয়টি গু*লি করেন চে গুয়েভারার বুকে এবং বুকের পাশে,যা তাঁর দেহ ভেদ করে দেয়ালে বড়-বড় গর্ত তৈরি করে ফেলে। তারপর তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ ভ্যালেগ্রান্দেতে নিয়ে যাওয়া হয় হেলিকপ্টারে। সেখান...

পূর্ব-পশ্চিম

 পূর্ব-পশ্চিম --------------- "বিশাল ক্যানভাসে রচিত এই উপন্যাসের ঘটনা প্রবাহ একই সঙ্গে ছুঁয়ে আছে এপার এবং ওপার বাংলা। শুরু সেই পঞ্চাশের মধ্যভাগে। দুই বাংলার রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রের পালাবদলের স্রোত কিভাবে এসে মিশেছে আশির দশকের মোহনায়, এই উপন্যাস তার এক জীবন্ত দলিল। এক দিকে জওহরলাল নেহেরুর মৃত্যু, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ, লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর অকাল প্রয়াণ, ইন্দিরা গান্ধীর অভ্যুত্থান, অর্থনৈতিক ক্রমাবনতি, তরুণ সমাজের মধ্যে  জেগে ওঠা বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা-উন্মাদনা, উগ্রপন্থী রাজনীতি, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ; অন্যদিকে ভাষা আন্দোলনের অব্যবহিত পরবর্তী সময় গনতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের আন্দোলন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে যুব সমাজের হতাশা, শেখ মুজিবের হত্যা-এ সমস্ত কিছুকে ছুঁয়ে প্রবাহিত 'পূর্ব- পশ্চিম' এর ঘটনাস্রোত। দুই বাংলার দুই পরিবারকে কেন্দ্র করে রচিত এই উপন্যাসে বিশেষ কোনো চরিত্রকে মূল চরিত্র বলা যাবে না। একইসঙ্গে অনেকগুলো প্রধান চরিত্র। এইসব চরিত্রের কেউ কেউ আবার পূর্ব বা পশ্চিম বাংলার গণ্ডিতেই আবর্তিত নয়, ইউরোপ-আমেরিকাতেও গেছে। ফলে কলকাতার কফি হাউজের পাশাপাশি কখনো পূর্ব...

ফাদার্স ডে-র ইতিহাস

ফাদার্স ডে-র ইতিহাস  করিম চৌধুরী (আজ বাবা দিবস। তাই পুরনো লেখা আবার।) আমেরিকায় বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান পালন করা হয়। আমেরিকার মানুষদের কিছু কাজ দেখে আমরা অবাক না হয়ে পারি না। তাদের এই অবাক করে দেয়া কাজকর্ম দেখে আমরা প্রাচ্যের মানুষরা ভাবি ওরা বোধ হয় কিছুটা পাগল। ব্রেনের নাটবল্টু দুই একটা হয়তো নেই। তাদের এসব পাগলামির কিছু অংশ এবার নতুন বছরে দেশের অনেকেই দেখেছেন। সংবাদপত্রের পাঠক মাত্রই লক্ষ্য করেছেন, ইংরেজি নববর্ষে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মি. ডেভিড এন. মেরিল তার স্ত্রীকে যাত্রী বানিয়ে নিজে রিকশাচালক সেজে ফটো তুলেছেন। আর সেই কার্ডে ‘রিকশাওয়ালা মেরিল’ নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদেরকে। রাজধানী ঢাকায় কয়েক ডজন বিদেশী রাষ্ট্রদূত থাকলেও পাগলামিটি করতে পেরেছেন শুধু আমেরিকান রাষ্ট্রদূত। তাদের এসব কান্ডকারখানা দেখে অনেকে কৌতুক করে বলেন, ওরা আসলে ফাজিল। শিক্ষিত ও আধুনিক মানুষরা অবশ্য মনে করেন আমেরিকানদের যে চমৎকার সেন্স অফ হিউমার তা দেখেই আমরা নানান যন্ত্রণার পূর্বদেশীয় মানুষরা ভাবি এসবই তাদের পাগলামি কিংবা ফাজলামি। আমাদের দেশে অনেক কিছুর অভাব থাকলেও অন্তত যন্ত্রণার অভাব নে...

বাল

 "বাল" এক অনন্য শব্দ ------------------------------ . বাল শুধু একটা শব্দ না। . বাল হচ্ছে কোটি কোটি মানুষের প্রতিবাদের অস্ত্র। "তুমি আমার বাল করতে পারবা।" . বাল হচ্ছে কোটি কোটি মানুষের হতাশার প্রতিচ্ছবি। "বালের এক জীবন পাইছি।" . বাল হচ্ছে তাচ্ছিল্যের বহিঃপ্রকাশ। "হাহ, আসছে আমার বাল।" . বাল হচ্ছে ধন্যবাদের মাধুর্যতা। "বিড়ি আনছোস?যাক বাল, জীবনটা বাঁচাইলি।" . বাল হচ্ছে প্রেরণার মন্ত্র। "কিচ্ছু হবে না বাল। প্রপোজ কইরা দে।" . বাল হচ্ছে জেলাসি। "বালডা এতো নাম্বার পায় ক্যামনে?" . বাল হচ্ছে নস্টালজিয়ার মশলা। "বাল, কি দিন ছিলো স্কুল লাইফে"। . বাল হচ্ছে টান টান উত্তেজনা। "মাইয়াটারে দেখ।পুরাই মাথা নষ্ট বাল।" . বাল হচ্ছে বন্ধুর ভালোবাসা। "বাল তুমি ফোন ধরোনা ক্যান? কই মুখ ঢুকাইছো"। . তাছাড়া বালের ফ্যান, বালের লাইট, বালের ফোন, বালের চার্জার, বালের খেলা, বালের খাওয়া, বালের দিন, বালের রাত, বালের কারেন্ট, বালের ফল, বালের টিভি, বালের ল্যাপটপ, বালের নেট, বালের সিম, বালের ওয়াইফাই, বালের কলম, বালের জুত...

রানু

 রানু ------ ১৯৯৬ সাল। নিউ ইয়র্কে একটা অপ্রত্যাশিত চিঠি পেয়েছিলাম। আমি থাকতাম নিউ ইয়র্ক মূল সিটিতে। থার্ড এভিনিউতে। জাতিসংঘ সদর দফতর আর বেলভিউ হসপিটালের মাঝামাঝি। যাকে স্থানীয় ভাষায় ম্যানহাটন(Manhattan)বলে। আমার ঠিকানা ছিলো... Karim Chowdhury  444 3rd Avenue  Apt# 09 NY 10016 USA এয়ারমেইল খামের বাঁ দিকে প্রেরকের নাম লেখা; রানু  চন্দ্রঘোনা  বাংলাদেশ  আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম। কেননা আমার চোদ্দগোষ্ঠীর কেউ কোনো কালেই চন্দ্রঘোনা ছিলো না। নিজের আত্নীয় হোক আর অপরিচিত কেউ হোক, কারো চিঠি পেলে আমি সঙ্গে সঙ্গে চিঠি খুলতাম না। আমেরিকায় আমাদের অন্যতম একটা কাজ ছিলো, প্রতিদিন কাজ শেষে বাসায় ফিরে রুমে ঢুকার আগেই লেটার বক্স খোলা। ওই দেশের বিভিন্ন কোম্পানি থেকে চিঠি আসে। ক্রেডিট কার্ডের বিল আসে। আমি আবার টাইম, নিউজউইক- এর গ্রাহক। তাই ম্যাগাজিন আসে। লেটার বক্স থেকে চিঠি নিয়ে আগে ১০/১৫ মিনিট ভাবতাম। কি হতে পারে চিঠির ভেতরের বিষয় বস্তু। ইউরোপ, আমেরিকায় যারা থাকেন তাদের বেশিরভাগ চিঠিতেই টাকা পাঠানোর কথা থাকে। আমি আবার ব্যাচেলর। খুব চিন্তায় পরে গিয়েছিলাম ওই চিঠি পেয়ে। কে এই রানু? এ...

প্রেমের চিঠি

 প্রেমের চিঠি ------------------ তখন ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়তাম। বয়সটাই উচ্ছ্বলতার। আমি সাইন্সে আর বন্ধু তাহের আর্টসে। আমি তাকে রাগাতাম, বলতাম- তোর ভেতর মানবিকতা নেই বলে তুই মানবিক বিভাগে পড়িস। তাহের ইকোনমিক্স প্রাইভেট পড়তো বাগিচাগাঁও রফিক স্যারের কাছে। স্যার এখনো আছেন। এই প্রাইভেট পড়তে গিয়ে চান্দু এক মেয়ের প্রেমে পড়ে যায়। এক বিকেলে কান্দিরপাড় (শহরের মূল কেন্দ্র) ডায়ানা রেস্টুরেন্টে চা খাওয়ার আড্ডায় তাহের অনুরোধ করলো, আমি যেনো সুন্দর করে একটা প্রেমপত্র লিখে দিই। আমি আগেই ছ্যাঁকা খেয়ে শোকাভিভূত।  শর্ত দিলাম, মাতৃ ভান্ডারে রসমালাই খাওয়াতে হবে। তাহের এক পায়ে খাড়া। আমি সুন্দর প্রেমের চিঠি লিখতে পারতাম বলে ফ্রেন্ড সার্কেলে সুনাম ছিলো। পর দিন মনের মাধুরি মিশিয়ে দুই পৃষ্ঠার এক প্রেমপত্র লিখলাম। জাহাঙ্গীর, হিরো, মিন্টু, খোকন, বাদল, ইকবাল, মুন্না, তাহের সবার সামনে চিঠি পড়লাম। সবাই রায় দিলো, এই চিঠি মেয়ে পেলে প্রেম হবেই। নিশ্চিত। মাতৃ ভান্ডারে রসমালাই খাওয়ার ধুম পরে গেলো। বিল দিলো তাহের। আমার চিঠি লেখার পারিশ্রমিক। দুই দিন পর তাহের আমার বাসায় গেলো সকাল ৯টায়। তাহের ঝাউতলা আর আমি কান্দিরপ...

ক্রোয়েশিয়া

 ক্রোয়েশিয়া ----------------- ৩২ বছর আগে ক্রোয়েশিয়া নামে কোনো দেশ পৃথিবীতে ছিলো না। ইউরোপের যে দেশটিতে আমি প্রথম গিয়েছিলাম সেই দেশটি পৃথিবী থেকে বিলিন হয়ে গেছে। নতুন প্রজন্ম সে দেশের নামই জানে না। দেশটির নাম ছিলো যুগোস্লাভিয়া। যুগোস্লাভিয়ার ইংরেজি বানান Yugoslavia. রাজধানী ছিলো বেলগ্রেড ( Belgrade)। বেলগ্রেডকে সার্বিয়ান  ভাষায় বিওগ্রাড (Beograd) বলা হতো। সার্ভিয়ানরা এখনো তাদের ভাষায় বিওগ্রাড বলে। বেলগ্রেড এয়ারপোর্ট নেমে মনে এক নতুন শিহরন অনুভব করলাম যে,আমি ইউরোপ মহাদেশে আছি এখন।  মার্শাল জোসেফ ব্রুজ টিটোর দেশ হিসেবে যুগোস্লাভিয়ার খুব পরিচয় ছিলো। জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনে নেতৃত্ব  ছিলো যুগোস্লাভ প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটোর আমলে। ১৫ দিন যুগোস্লাভিয়া চষে বেড়িয়েছিলাম। বলতে গেলে যুগোস্লাভিয়া পুরোটাই ঘুরে বেড়িয়েছি। পরে আমি অস্টৃয়া চলে যাই।  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৫ সালে যুগোশ্লাভিয়া গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের অস্থায়ী সরকার স্থাপন করে। সোভিয়েট ইউনিয়ন আর যুগোশ্লাভিয়ার যৌথ বাহিনী জার্মান অকুপেশন থেকে  সারা দেশকে মুক্ত করে। পরে নব্বইয়ের দশকে আমার চোখের সামনে যুগোস...

২টা মা=১টা মামা

 ২টা মা=১টা মামা -------------------------- একেবারেই ব্যক্তিগত। ইদানীং স্কুল কলেজ জীবনের কথা খুব মনে পড়ে। ছবিতে আমার মেজো আপা। দুই দিকে দুই ভাগ্নি। আপার নাম ফিরোজা বেগম। বাসা কান্দিরপাড়। শহরের একেবারে প্রাণকেন্দ্রে। আপার পাঁচ মেয়ে এক ছেলে। নাজমা, ঝর্ণা, পান্না, শিল্পি, লাভলি। একমাত্র ছেলে শাহিন। সবার ছোট। আমার স্কুল-কলেজ জীবন আপার বাসায়ই কেটেছে। দুলাভাই মি.দেলোয়ার হোসেন সরকার দারুণ মজার মানুষ। শৌখিন, ফানি, ফ্রেন্ডলি। দুলাভাই টঙ্গীর অলিম্পিয়া টেক্সটাইল মিল- এ পারচেজ অফিসার ছিলেন। তাই অভিভাবক হিসেবে আমাকে আপার বাসায় থাকতে হয়েছে। কারণ বাসায় পুরুষ বলতে কেউ নেই। শাহিন খুব ছোট। আজ দুই ভাগ্নিকে নিয়ে একটু স্মৃতি। নাজমা, ঝর্ণা আমার অল্প ছোট। আমার সঙ্গে ওদের সম্পর্ক ছিলো বন্ধুর মতো। কখনো ভাইয়ের মতো। ওদেরকে ভালোওবাসতাম খুব। ঝগড়া করতাম, রাগারাগি করতাম, মারামারিও করেছিলাম। বলা যায়, আমি বড় হয়েছি ওদের সঙ্গে। প্রেম ট্রেম নিয়ে ওদের শাসন করলে অন্য রুম থেকে আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলতো, নিজে প্রেম করে আবার আমাদের মারে! সবার বিয়ে হয়ে গেছে। ঘর সংসার নিয়ে ব্যস্ত। সকলেই কুমিল্লা শহরে থাকে। শিল্পি আমেরিকায় স্...

কী? বিয়ে শাদী করছো?

 কী? বিয়ে শাদী করছো?                   ফান পোস্ট  ----------------------------------                  ********** "কী? বিয়ে শাদী করছো? না এখনো আজান দিয়েই চলতেছো?” এই কথা স্কুল জীবন থেকেই শুনে আসছি, সিনিয়র ভাইদের মুখে এমন কথা শুনে কিশোর বয়সে ভাবতাম, বিয়ের সাথে আজানের কী সম্পর্ক? আজান দিয়ে চললে কি বিয়ে করতে হয় না? কলেজে পড়ার সময় আমরা বন্ধুরাও বিষয়টা বুঝে একে অপরকে এই কথা বলতাম। কিন্তু এর শানে নুযুল জানতাম না।  ইউরোপে থাকতে একবার সুইজারল্যান্ড গিয়েছিলাম বেড়াতে। অস্টৃয়া-সুইজারল্যান্ড প্রতিবেশি দেশ। ভিয়েনা থেকে সুইজারল্যান্ডের জুরিখ - Zurich (সবচেয়ে বড় শহর) ট্রেনে যেতে সময় লাগে ৭ ঘন্টা। আমি, কালাম, বাবু, নিউটন, পিটার আর মাইকেল। কালাম ফেনির, আমি কুমিল্লার, বাবু ঢাকা গোরানের, নিউটন টাঙ্গাইলের, পিটার আর মাইকেল অস্টৃয়ান। আমাদের প্রধান কাজই ছিলো ঘুরাঘুরি করা। বাড়ি ভাড়া আর নিজের খরচের জন্য ৮ ঘন্টা চাকরি করা। ইউরোপ আমেরিকায় কাজের নির্ধারিত সময় দৈনিক আট ঘন্টা। সপ্তাহে ৪০ ঘন্টা। দুইদিন ছুটি। ছ...

আজম খান

 আজম খান  ----------------- খুব ছোটবেলা থেকেই গান ভালোবাসি খুব। আজো। ছাত্র জীবনে প্রচুর গান গাইতাম। নাইন টেনে উঠে আজম খানের পপ গান প্রথম শুনেছিলাম। কয়েকটা গান এখনো মুখস্থ আছে। আজ ৫ জুন পপ গানের সম্রাট আজম খানের ১২তম মৃত্যু বার্ষিকী। ২০১১ সালের এই দিনে তিনি মৃত্যু বরণ করেন। তাঁর আসল নাম মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান (২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৫০- ৫ জুন ২০১১)। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা, সংগীতশিল্পী, অভিনেতা, ক্রিকেটার ও বিজ্ঞাপনের মডেল ছিলেন। তিনি আজম খান নামে সর্বাধিক পরিচিত। তাঁকে বাংলাদেশের পপ ও ব্যান্ড সংগীতের একজন অগ্রপথিক বা গুরু হিসেবে গণ্য করা হয়।  আজম খানের জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে  "রেল লাইনের ঐ বস্তিতে...।" "ওরে সালেকা ওরে মালেকা ওরে ফুলবানু পারলি না বাজাতে....।" "আলাল ও দুলাল তাদের বাবা হাজি চান চানখার পুলে প্যাডেল মেরে পৌঁছে বাড়ি...।" "আসি আসি বলে তুমি  আর এলে না সেই দিন থেকে জীবনের সাথে শুরু সাধনা .....।" অনামিকা, অভিমানী, ইত্যাদি।  মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকায় সংঘটিত কয়েকটি গেরিলা অভিযানে তিনি অংশ নেন। প্রথম কনসার্ট প্রদর্শিত হয় বাংলাদেশ টেলিভিশনে...

কে নাস্তিক!!!????

 কে নাস্তিক!!!???? ---------------------------- 'মহিয়সী নারী' বেগম রোকেয়া -  "আমাদিগকে অন্ধকারে রাখিবার জন্য পুরুষগণ ঐ ধর্মগ্রন্থগুলিকে ঈশ্বরের আদেশপত্র বলিয়া প্রকাশ করিয়াছেন।... তবেই দেখিতেছেন, এই ধর্মগ্রন্থগুলো পুরুষ রচিত বিধি ব্যবস্থা ভিন্ন আর কিছুই নহে। ...কোন স্ত্রী মুনির বিধানে হয়তো তাহার বিপরীত নিয়ম দেখিতে পাইতেন।..যেখানে ধর্মের বন্ধন অতিশয় দৃঢ় সেইখানে নারীর প্রতি অত্যাচার অধিক।" (মতিচুর গ্রন্থ) ‘অলঙ্কার না Badge of Slavery’ প্রবন্ধে রোকেয়া লিখেছেন “ধর্মগ্রন্থসমূহ ঈশ্বর-প্রেরিত বা ঈশ্বরাদিষ্ট নহে। যদি ঈশ্বর কোন দূত রমণী শাসনের নিমিত্ত প্রেরণ করিতেন, তবে সে দূত কেবল এশিয়ায় সীমাবদ্ধ থাকিত না। ... যে কথা পুরাকালে অসভ্য বর্বরগণ বিশ্বাস করিয়াছিল, তাহা বর্তমান কালের সুসভ্যগণ যদি বিশ্বাস করেন, তবে সভ্যতা ও অসভ্যতায় প্রভেদ কি? যাহা হউক আমরা আর ধর্মের নামে নতমস্তকে নরের প্রভুত্ব সহিব না।” বেগম রোকেয়াকে 'মহিয়সী নারী' বলা হয়। বেগম রোকেয়ার নামে রংপুরে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ও আছে। আর তাসলিমা নাসরিন - 'লজ্জা' উপন্যাস লিখেই হলেন দেশান্তরী প্রায় দুই যুগের উপরে!!!!! ...

ফাটুসকি

 ফাটুসকি ------------- কিছু বই পড়েছিলাম আগে। সে সব বইতে পাকিস্তানের ভেতরের রাজনীতির অনেক কথা জানা যায়। জানা যায় অভিজাত শ্রেণির জৌলসপূর্ন জীবন যাপন। আবার নৃ*শংস হ*ত্যা। জুলফিকার আলী ভুট্টোর 'If I am assassinated' বা 'আমাকে হত্যা করা হলে'- বইটি ছাত্র জীবনেই পড়েছিলাম। পরে বেনজীর ভুট্টোর Daughter of the East পড়েছিলাম।  পরে জেনারেল নিয়াজির একটা বই পড়েছিলাম  The Betrayal of East Pakistan.  বৃগেডিয়ার সিদ্দিক সালিকের Witness to Surrender ছাত্র জীবনেই পড়া। এই বইগুলোতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক অজানা তথ্যও আছে।  সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের In the Line of Fireও পড়েছি। আমাদের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমদের "শান্তির স্বপ্নে" ২০০৮ সালে প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই পড়েছিলাম। এই বইতেও পাকিস্তান প্রসঙ্গ আছে। এসব বই পড়তে আমার ভালো লাগে। রাষ্ট্রের ক্ষমতাশালীদের ভেতরের খবর আর তাদের রাজকীয় জীবন যাপন খুবই আকর্ষণীয়। পাকিস্তান সম্পর্কে আমার মোটামুটি ধারণা আছে। কয়েকদিন ধরে জুলফিকার আলী ভুট্টোর নাত্নী, মুর্তজা ভুট্টোর মেয়ে, বেনজির ভুট্টোর ভাতিজী- ফাতিমা ভুট্টোর একটা বই ...

জন্মদিন

 জন্মদিন  ------------- আমাদের বাবা মায়েরা আগে জন্মের সময় জন্ম তারিখ লিখে রাখতেন না। বাংলা মাসের হিসেবে বিশেষ কোনো ঘটনার কথা মনে রেখে জন্ম তারিখ মনে রাখতেন। পরে অনুমান ভিত্তিক একটা জন্ম তারিখ দিয়ে দিতেন। স্কুলে ভর্তির সময় শিক্ষকরা নিজের পছন্দ মতো একটা জন্ম তারিখ দিতেন। আবার নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের সময় আরেকটু কমিয়ে শিক্ষকরা আরেকটা জন্ম তারিখ দিতেন।  ছেলেদের চাকরিতে ঢুকার বয়স যাতে বেশি হয়ে না যায় এবং বিয়েশাদীর ব্যাপারে মেয়েদের বয়স যেনো একটু কম দেখানো যায় সেই বিবেচনায়ও অনেক অভিবাবক মেয়েদের বয়স স্কুলে ভর্তির সময় অথবা বিয়ের কাবিনে ইচ্ছা করেই ২/১ বছর কেউ আরো বেশি কমিয়ে দেন।  আর যারা বিদেশে বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকায় গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন তারাও নতুন জন্ম তারিখ দেন। এখন মধ্যপ্রাচ্যে যেতেও অনেকে জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে পাসপোর্ট করেন। কেউ বয়স বাড়িয়ে দেন কেউ আবার কমিয়ে দেন।  এই হিসেবে বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেকরও বেশি নাগরিকের জন্ম তারিখই ভুয়া এবং অনেকেরই আসল জন্মদিন এবং লিখিত জন্মদিনের মধ্যে কোনো মিল নেই। অনেকের একাধিক জন্মদিন আছে। স্কুল, কলেজ, পাসপোর্ট  এবং অন্যান্...

অ্যাঁই কিচ্চি

 “অ্যাঁই কিচ্চি" ------------------- আমরা যারা জাপান, ইউরোপ, আমেরিকায় ছিলাম- তারা দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে চলারফেরা করার সুযোগ পায়। আমিও পেয়েছিলাম এমন সুযোগ। দেশে যেমন এক জেলার লোক আরেক জেলার লোককে পছন্দ করে না বিদেশে এমনটা হয় না৷ আমার ক্ষেত্রে হয়নি। বিদেশে জেলার চেয়ে দেশ বড় হয়ে যায়। আমরা একই দেশের এটাই বড় পরিচয়।  তিনি ছাগলনাইয়ার আবুল কালাম আযাদ। এক সময় ফেনির 'সাপ্তাহিক হাজারিকা’র বার্তা সম্পাদক ছিলেন। অস্টৃয়ায় আমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা। সজ্জন মানুষ। এক সময় কম্যুনিস্ট পার্টি করতেন তাই আমার সঙ্গে মিলতো বেশি। উনার ছেলের নামও রেখেছেন লেনিন। আন্তরিক মানুষ। সমবয়সি হলেও আমার পাগলামি দেখে আমাকে বুঝাতেন। উল্টা পাল্টা চললে বন্ধুর মতো শাসন করতেন। আমার জন্য নোয়াখালী তিনি বিয়েও ঠিক করেছিলেন। আমি ফেনি জেলার এই লোকটির কাছে ঋণী হয়ে রইলাম। নিউ ইয়র্কে গিয়ে পেলাম শাহ আলম ভাইকে। আমার বয়সি। আমি আমেরিকায় গিয়ে উঠেছিলাম লেক্সিংটন এভিনিউর ‘হোটেল আমেরিকা ইন্টারন্যাশনাল’এ। দুইদিন রেস্ট করে হাঁটতে বেরুলাম। একটু সামনে গিয়ে দেখি ‘স্পাইস কর্নার’। একটা বাংলা কাম ইন্ডিয়ান স্টোর। আমেরিকায় আজ আমা...

ভিয়েনায় মারামারি!!!

 ভিয়েনায় মারামারি!!! -------------------------------- আমার জীবনের যুবক বয়সের প্রধান সময়টা কেটেছে ইউরোপ – আমেরিকায়। তাই আমার অনেক পোষ্টের পুনরাবৃত্তি বা পুনরোক্তি হতে পারে। কোন ছবি কখন দিয়েছিলাম বা কি লিখেছিলাম তা সব সময় মনে থাকে না। আমি খুব পড়তে ভালোবাসি। স্কুল জীবন থেকেই গল্প, কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ফিচার, ভ্রমণ কাহিনী, আত্নজীবনীসহ অন্যান্য বইতো আর কম পড়িনি। একবার আমেরিকায় একজনকে পেয়েছিলাম, ফ্লোরিডার ফোর্ট মায়ার্স সিটিতে। সবাই উনাকে ‘জামাল মামু’ ডাকতো। বাড়ি ঢাকায়। আমাদের সিনিয়র ছিলেন। তবে বন্ধুর মতো। উনি কিভাবে সবার 'কমন মামু' হলেন তা আমি আজো জানি না। তো একদিন কাজের ফাঁকে আমাকে ফিউদর দস্তয়ভস্কির উপন্যাস ‘জুয়াড়ি’ পড়তে দেখে বলেছিলেন, '‘কি করতে এসব মিছা কথা পড়েন মামু ?’' এমন কথাও আমি জীবনে প্রথম শুনেছিলাম। তার কথা, ''লেখকরা কল্পনা করে বানিয়ে বানিয়ে গল্প উপন্যাস লিখে। আমিতো জানিই এটা সত্য না, তো জেনে শুনে মিছা কথা পড়বো কেনো ?’' তার কথায় আমি মনে কষ্ট পেয়েছিলাম। তবে তিনি খুব মিথ্যা বলেননি। আবার গল্প, উপন্যাস ইত্যাদি জীবন থেকেই নেয়া। পরে ভাবলাম, কষ্ট করে কল্পনার...

বৃষ্টি

 বৃষ্টি ------ কুমিল্লায় বৃষ্টি হচ্ছে। বর্ষাকাল আমার প্রিয় ঋতু। বৃষ্টি হচ্ছে। কি সুন্দর দৃশ্য। গাছের পাতাগুলো কি সতেজ, সজীব। ধুলোবালির দেশে গাছের পাতায় বালু পরে সবুজাভ থাকে না। বর্ষাকালের বৃষ্টিতে পাতার বালি ধুয়ে কি সবুজ হয়ে যায়। প্রকৃতি শান্ত থাকে। এই প্রচণ্ড গরমের পর আবহাওয়া বৃষ্টিতে হয়ে যায় এসি। বৃষ্টিতে ভেজা যে কি আনন্দ আর উপভোগ্য। আমি প্রতি বছর বৃষ্টিতে ভিজি। তবে সাধারণ মানুষের অসুবিধা। রাস্তায় পানি জমে থাকে। অনেক জায়গায় প্যাক কাঁদা। অনেক রাস্তা ডুবে যায়। যাতায়াত ভাড়া বাড়ে। তবু বৃষ্টি আমার প্রিয়। বৃষ্টি নিয়ে অনেক গানও আছে। ১। অনেক বৃষ্টি ঝরে তুমি এলে যেন এক মুঠো রোদ্দুর আমার দু'চোখ ভরে তুমি এলে।  ২। আমার সারাটা দিন মেঘলা আকাশ বৃষ্টি তোমাকে দিলাম।  ৩। বৈশাখী মেঘের কাছে জল চেয়ে তুমি কাঁদবে আমি চাইনা। ৪। ওগো বৃষ্টি আমার চোখের পাতা ছুঁইয়ো না আমার এতো স্বাধের কান্নার দাগ ধুইয়ো না সে যেন এসেই দেখে পথ চেয়ে তার কেমন করে কেঁদেছি। " © Karim Chowdhury

বিয়ানী

 বিয়ানী ---------- আমাদের সময় এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার সার্টিফিকেট ও মার্কশীটে রোল নাম্বার কিভাবে লিখা হতো তা সকলের জানা আছে। আমার সার্টিফিকেটগুলোতে এখনো তাই আছে। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোর নাম খেয়াল করবেন। যেমন কেন্দ্রের নাম যদি হয় কুমিল্লা শহরের কোনো স্কুল বা কলেজ তবে লেখা হতো... কেন্দ্র-কুম । নং ৩৩৫৭০। কেন্দ্রের নাম যদি হয় বুড়িচং তবে লেখা হতো, কেন্দ্র-বুড়ি । নং.........। তেমনি ছাগলনাইয়া হলে লেখা হতো, কেন্দ্র- ছাগল । নং.........। বিয়ানী বাজার হলে লেখা হতো, কেন্দ্র- বিয়ানী । নং......... ।  তখন সারাদেশে যেমন চারটি বিভাগ ছিলো তেমনি শিক্ষা বোর্ডও ছিলো চারটি। ঢাকা, কুমিল্লা, রাজশাহী ও যশোর। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে তৎকালীন চট্রগ্রাম বিভাগের সব জেলা অন্তর্ভুক্ত ছিলো।  ছাত্র জীবনে কিছু সময় কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে চাকরি করেছিলাম শখ করে। এই চাকরিরও একটা ইতিহাস আছে। আমাদের এক বন্ধু বেলাল, সঙ্গে একজন দাঁড়িওয়ালা যুবককে নিয়ে একদিন বাসায় এসে আমার ডাক নাম ধরেই বললো " মন্টু, তুই তো ইংরেজিতে ভালো। উনি আমাদের লজিং মাস্টার। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে লোক নিয়োগের বিজ্ঞাপন দিয়েছে। উনার একটা চাকরির ...